ICMR সবসময় ঠিক না হলেও, চা-কফি খাওয়ার বিষয়ে তাঁদের পরামর্শ সঠিক। এই পানীয়র দুটোর ওপরে আমাদের শরীর একটা নির্ভরতা তৈরি করে ফেলে। আমরা যে লাল চা সাধারণত খাই, তাতে ক্যাফিন থাকে, আর গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাফিন শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক। হার্বাল চায়ের দিকে ঝুঁকলেই উপকার বেশি। ক্যামোমাইল, গোলাপ, ড্যান্ডেলিয়ন রুট, জেসমিন এবং জবা ফুলের মতো ক্যাফেইনমুক্ত হার্বাল চাগুলি পান করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। যেমন, ক্যামোমাইল চা নার্ভগুলোকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে, আর জবা ফুলের চা চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখে।
মুগ্ধা প্রধান, একজন ফাংশনাল নিউট্রিশনিস্ট, iThrive-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও বলছেন, জৈব উপাদানযুক্ত হার্বাল চা পাচনক্রিয়ায় সাহায্য করে। এছাড়াও তাদের বায়োঅ্যাকটিভ কম্পাউন্ডগুলি গ্যাসের সমস্যা দূর করে। তবে খাদ্যের পরিমাণ এবং গুণগত মান সম্পর্কে সচেতন থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণস্বরূপ, হলুদের অনেক ঔষধি গুণাবলী রয়েছে কারণ এতে কারকুমিন রয়েছে, কিন্তু বেশি পরিমাণে গ্রহণ করলে লিভারের ক্ষতি হতে পারে। একইভাবে দিনের শুরুতে নিয়মিত চা পান করা একধরনের ক্যাফেইন নির্ভরতার লক্ষণ, যা অ্যাড্রিনাল ফাংশনে বাধা ঘটায় এবং কর্টিসল নির্গমনে বিঘ্ন ঘটায়। ঠিক একইভাবে রাতে দেরিতে চা পান করলে স্লিপ সাইকেলে বিঘ্ন ঘটতে পারে।
প্রধান আরও বলছেন, চা ও কফির ক্যাফেইনের কারণে অনেকের একটা নির্ভরতা তৈরি হয়ে যায়। তাদের সকালে চা না খেলে চলে না এবং মাথা ধরে যায়। এই নির্ভরতার কারণেই চা খাওয়ার কিছুক্ষণ পর শরীরে একটা এনার্জি আসে, কিন্তু কয়েক ঘন্টা পর সেই এনার্জি আর থাকে না। এছাড়াও, চাতে থাকা ট্যানিন ও অক্সালেট আয়রন শোষণে বাধা সৃষ্টি করে।”
জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা (NFHS-5) থেকে দেখা গেছে, ভারতে প্রায় 57% অগর্ভবতী এবং 52% গর্ভবতী মহিলা রক্তস্বল্পতায় ভুগছেন। এই মহিলাদের জন্য চা পান করা মানে রক্তস্বল্পতাকে আরও বাড়িয়ে তোলা। এছাড়াও চাতে এডেড সুগার এবং হাইপার-প্রসেসড দুধও শরীরের ক্ষতি করে।
সারকথা, চা ও কফি পান করার ব্যাপারে ICMR-এর পরামর্শ অনুসরণ করা শ্রেয়। এতে স্বাস্থ্য বজায় রাখা এবং ক্যাফেইন নির্ভরতা ও তার সঙ্গে জড়িত স্বাস্থ্যসমস্যা এড়ানো সম্ভব।
সাস্থ্য সম্পর্কে এরকম আরও খবর পড়তে চোখ রাখুন সংবাদ সূত্র ওয়েবসাইটে।