দীর্ঘ বিমানযাত্রায় মদ্যপান করেন অনেকেই। কিন্তু জানেন এর ঝুঁকি কী? আসুন দেখা যাক।
নতুন এক গবেষণায় বিমানে যাত্রাকালে মদ্যপান ও ঘুমানো নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। অনেকেই দীর্ঘ বিমান যাত্রায় মদ্যপান করে ঘুমান, কিন্তু এটি হৃদয়ের জন্য ভালো নয়। এমনকি সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রেও এটি ক্ষতিকারক।
‘থোরাক্স’ নামক এক জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘ বিমান যাত্রায় মদ্যপান করে ঘুমালে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা (SpO2) কমে যায় এবং হৃদস্পন্দন দীর্ঘক্ষণ বেড়ে থাকে।
হাইপোব্যারিক হাইপক্সিয়া – এটা কী?
যখন আমরা উচ্চতায় যাই, বাতাসের চাপ কমে যায়। এই অবস্থায় বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণও কমে যায়। ফলে, আমাদের ফুসফুসে ঠিকমতো অক্সিজেন পৌঁছায় না। এর ফলে রক্তেও অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়।
রক্তে অক্সিজেন কম থাকলে শরীরে নানা সমস্যা হতে পারে। এই অবস্থাকেই বলা হয় হাইপোব্যারিক হাইপক্সিয়া। এটি ঘটে কারণ উচ্চতায় বাতাসের চাপ কম থাকে, তাই অক্সিজেনও কম থাকে। হাইপোব্যারিক হাইপক্সিয়ার কারণে শুরুতে হাঁপানি, ক্লান্তি, মাথা ব্যথা, বমি বমি ভাব, আর মাথা ঘোরাতে পারে। শরীর যখন কম অক্সিজেনে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে, তখন এসব লক্ষণ দেখা যায়।
বেশিক্ষণ এই অবস্থায় থাকলে অলটটিউড সিকনেস, পালমোনারি এডিমা, এমনকি সেরিব্রাল এডিমাও হতে পারে।
এই সমস্যা এড়াতে ধীরে ধীরে উঁচুতে ওঠা ভালো। এতে শরীর কম অক্সিজেনে অভ্যস্ত হতে পারে। তাছাড়া, কিছু ওষুধও পাওয়া যায় যা লক্ষণ কমাতে এবং শরীরকে উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে।
একদল বিজ্ঞানী গবেষণা করে দেখেছেন, মদ্যপান করলে রক্তনালীর দেওয়াল শিথিল হয়, ফলে ঘুমের সময় হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। এই কারণে বিজ্ঞানীরা বলছেন, “দীর্ঘ বিমান যাত্রায় মদ্যপান সীমিত রাখুন।”
গবেষণায় 48 জনকে দুই দলে ভাগ করা হয়। একদলকে রাখা হয় সাধারণ ঘুমের ল্যাবে, যেখানে সমুদ্রপৃষ্ঠের মতো বাতাসের চাপ। আরেক দলকে রাখা হয় এমন কক্ষে, যেখানে বিমানের ভেতরের মতো চাপ, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে 2,438 মিটার উঁচুতে।
প্রতি দলে 12 জন করে 4 ঘন্টা ঘুমান। কিছু সময় তারা মদ্যপান করে ঘুমান, আবার কিছু সময় মদ্যপান না করেই ঘুমান।
গবেষকরা জানিয়েছেন, সুস্থ মানুষের ক্ষেত্রেও বিমানের কম বাতাসের পরিবেশে মদ্যপান করে ঘুমানো হৃদপিণ্ডের ওপর অনেক চাপ সৃষ্টি করে। হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের সমস্যা থাকলে তা আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।
হেলথ ও লাইফস্টাইল সম্পর্কে এরকম আরও খবর পড়তে চোখ রাখুন সংবাদ সূত্র ওয়েবসাইটে।